পূজো আসছে বায়না আসার অপেক্ষায় রঘুনাথগঞ্জের ঢাকি পাড়া

বিপ্লব দাস : রঘুনাথগঞ্জ ১২ই সেপ্টেম্বর- দুর্গোৎসবের সঙ্গে ঢাক যেন অপরিহার্য। দুর্গা পুজো মানেই ঢাকের তালে ধুনুচি নাচ। প্রতি বছর তাই কয়েক মাস আগে থেকেই ঢাকিদের পাড়ায় , মহল্লায় শুরু হয়ে যায় তুমুল ব্যস্ততা, মহড়া। বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসতে থাকে বায়না। জেলার মধ্যে তো বটেই জেলা ছাড়িয়ে ভিন রাজ্যে দলবল নিয়ে ঢাকিরা পাড়ি দিতেন। কিন্তু করোনা এবছর ঢাকিদের মনে নিয়ে এসেছে একরাশ হতাশা।
উৎসবের আমেজের বদলে বিষণ্ণতার ছোঁয়া ঢাকিদের মনে। মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জ 1 নম্বর ব্লকের কানুপুর পঞ্চায়েতের সোনাটিকরি গ্রামের
রবিদাস পাড়া ঢাকিদের পাড়া হিসেবেই পরিচিত। এই রবিদাস পাড়ায় প্রায় 22 টি পরিবারের একমাত্র উপার্জনের পথ এই ঢাক বাজানো। জেলার বিভিন্ন জায়গার
সাথে কলকাতাও যেতেন ঢাকিরা। তবে এবছর কি হবে দোলাচলে রয়েছেন। সযত্নে ঢাক বের করেছেন, ঢাক সারিয়েও রাখছেন, কিন্তু ঢাকের বোলেও যেন বিষাদের
সুর। ঢাকিদের কথায়, করোনা আবহে তাদের রুজি রোজগারের পথ বন্ধ। দুর্গা পুজো নিয়ে বছরভর মনে আশার আলো জাগলেও- বর্তমানে অনিশ্চয়তার মধ্যেই
রয়েছেন। বায়না পাবেন কি পাবেন না- ঢাকিদের চোখে মুখে এখন দুশ্চিন্তার ছাপ। বংশ পরম্পরায় এই কাজ করে আসছেন ঢাকিরা। এবছর এখনও অবধি বায়না
কিছুই আসে নি। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সেই ১৯২৮ সালে এই এলাকায় জমিদারের বাড়িতে দুর্গা পুজো উপলক্ষে ঢাক ঢোল, বিভিন্ন বাদ্য যন্ত্র বাজানোর বায়না পান ঢাকিরা। বাসবাসের জন্য এই জায়গাটিই দেওয়া হয় ঢাকিদের। সেই থেকেই এই রবিদাসপাড়ায় ঢাকিদের বাস, বংশ পরম্পরায় চলে আসছে ঢাক বাজানোর
প্রক্রিয়া। সেই রবিদাসপাড়ায় এবছর করোনা আবহে বিষাদের সুর। ক দিন পর মহালয়া- পুজোর বাকি মাস খানেক। এখনও বায়না আসেনি।
বছেরর বড় মরশুমে উপার্জনের পথ বন্ধের মুখে। তবে অনেকেই এখনও আশায় রয়েছেন। সব নিয়ে ঢাকি পাড়ায় আগমনীর সুরের আগেই যেন বইছে বিষাদের সুর।