ওয়াংখেড়েতে মেয়েদের জন‍্য সমতা ও ক্ষমতায়নের প্রচার করলেন বেকহ‍্যাম

শিশুদের সঙ্গে বেকহ্যাম

নিজস্ব সংবাদদাতা কলকাতাঃ নিজের অমতে বাড়ির চাপে মেয়েদের অল্প বয়সে বিয়ে হয়ে যাওয়ার ঘটনা নতুন নয়। তারমধ্যেও ব‍্যতিক্রমী যাঁরা তাঁরা পথ বদলে ফেলেন স্বপ্ন সফল করতে। রিংকু প্রভিবা তেমনই একজন মহিলা যিনি অনেক বাধা বিঘ্ন অতিক্রম করে তাঁর স্বপ্নকে সার্থক করার চেষ্টা করছেন। বছর ছয়েক আগে রিঙ্কুর পরিবার তাঁকে স্কুলের পড়া ছাড়িয়ে বিয়ে করার জন্য চাপ দেয়। কিন্তু চাপের কাছে নতি স্বীকার না করে রুখে দাঁড়িয়ে নিজেই নিজের বিয়ে বন্ধ করেছিলেন। তাঁকে এই সিদ্ধান্ত নিতে পরোক্ষে সহযোগিতা করেছিল ইউনিসফ। ইউনিসেফ-সমর্থিত ‘যুবতী মেয়েদের’ গ্রুপে বাল্যবিবাহের ক্ষতিকর পরিণতি জানার পর, রিঙ্কু একজন সমাজকর্মীর কাছে তার দুর্দশার কথা জানান এবং নিজের বিয়ে বন্ধ করেন। আজ, রিংকু গুজরাতের বানাসকান্থা জেলায় নার্সের প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। তাঁর সঙ্গে দেখা করেন ইংল্যান্ডের ফুটবল তারকা ডেভিড বেকহ‍্যাম। তিনি বলেন, “ যেসব মেয়েরা পড়াশোনা শেষ করে তাদের স্বপ্ন পূরণ করতে চায় তাদের কাছে রিঙ্কু রোল মডেল।” বেকহ্যাম, ইউনিসেফের গুড উইল অ্যাম্বাস‍্যাডার‌‌।

মুম্বইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে ভারত-নিউজিল্যান্ডের সেমিফাইনাল ম্যাচ চলাকালীন ক্রিকেটারদের উৎসাহ দিতে দেখা যায় এই কিংবদন্তী ফুটবল তারকাকে। ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে আসার আগে, বেকহ‍্যাম গুজরাতে শিশু এবং কিশোর-কিশোরীদের সঙ্গেও দেখা করেন। তাঁদের সঙ্গে আন্তরিক কথাও বলেন। পরে বলেন, “এরা সবাই তাদের সমাজে উন্নতি এবং উদ্ভাবন নিয়ে ভাবছেন।” বেকহ‍্যাম ভারতে এখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের সঙ্গে ইউনিসেফের যৌথ সহযোগিতায় এই কর্মকাণ্ড উদযাপন করছেন। তিনি বলেন, “ একজন মেয়ের বাবা আমি। রিঙ্কু এবং অন‍্যান‍্য মেয়েদের কথা আমাকে নাড়া দিয়েছে। এঁরা সকলেই নিজেদের ভবিষ‍্যতের কথা ভাবার পাশাপাশি সমাজের উন্নতির কথা ভাবছেন। আমি অনুপ্রাণিত হয়েছি।” কোভিড-১৯ মহামারী দক্ষিণ এশিয়ায় লিঙ্গ বৈষম্যকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। গার্হস্থ্য সহিংসতা বৃদ্ধি, বাল্যবিবাহ এবং বেতনের কাজ এবং কর্মসংস্থানের ক্ষতি, মেয়ে এবং নারীদের প্রভাবিত করেছে। ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে বেকহ্যাম কিংবদন্তি ক্রিকেটার ও ইউনিসেফের দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক রাষ্ট্রদূত শচীন তেনডুলকর শিশুদের সাথে যোগ দেন। এঁনারা মেয়েদের এবং ছেলেদের জন্য #BeAChampion-এ খেলাধুলা এবং জীবনে যাতে ছেলেমেয়ে নিৰ্বিশেষে সমানভাবে অংশগ্রহণ করতে পারে সেজন্য এই প্রচারে ভাগ নিয়েছেন।
ভারতে এই চার দিনের সফরের সময় বেকহ্যাম দেখেছেন কীভাবে ভারত সরকারের অংশীদারিত্বে ইউনিসেফ-সমর্থিত প্রোগ্রামগুলি মেয়ে ও মহিলাদের জন্য সুযোগ তৈরি করছে। বাল্যবিবাহ এবং শিশুশ্রমকে প্রতিরোধ করে শিশুদেরকে তাদের স্কুলে পড়া চালিয়ে যেতে সাহায্য করেন এমন বিভিন্ন ক্ষেত্রে কর্মরত কর্মী এবং সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গেও তিনি কথা বলেন। “বেকহ্যামের ভারত সফর প্রতিটি শিশুর জন্য সমান সুযোগ এবং অধিকারের গুরুত্বের বার্তাটিকে পৌঁছে দিচ্ছে। তার সফর ইউনিসেফ-এর মিশনকে শক্তিশালী করবে,” বলেছেন ইউনিসেফের ভারতের প্রতিনিধি সিনথিয়া ম্যাকক্যাফ্রে।