বৃষ্টির জলে বাগানে চাষ কৃষ্ণনাথ কলেজের প্রদর্শনীতে

ঋত্বিক দেবনাথ, বহরমপুরঃ আপনি কী জানেন বৃষ্টির জল সঞ্চয় করে সেই জলকে আপনার রোজকার ব্যবহারের কাজে লাগানো যেতে পারে? বা আপনার বাড়িতে নিত্যদিনের বর্জ্য পদার্থকে জৈবসার হিসাবে ব্যবহার করতে পারেন। কিংবা জল বা হাওয়া থেকে তৈরি বিদ্যুৎ আপনার রোজকার কাজে লাগতে পারে। হ্যাঁ! গল্প মনে হলেও এসবই সত্যি। যেগুলি আমরা প্রতিদিনের জীবনে খুব একটা গুরুত্ব দিয়ে ভাবি না, তাই-ই উঠে এল কৃষ্ণনাথ কলেজ আয়োজিত বিজ্ঞান প্রদর্শনীতে। পড়ুয়াদের হাত দিয়েই উঠে এল পরিবেশ বান্ধব বিভিন্ন মডেল।

কে.এন.কলেজের শারীরবিদ্যা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী তিতলি কাদের এবং সহ আরও চার সহ পাঠীরা মিলে বৃষ্টির জল সংরক্ষণের ওপর একটি মডেল বানিয়ে ছিল। সেখানে তারা দেখায় কীভাবে বৃষ্টির জল সরাসরি একটি ট্যাঙ্কিতে সংরক্ষণ করে তারপর সেই জল পাইপের মাধ্যমে চলে যাচ্ছে সরাসরি গ্রাউন্ডে। সেই জলের মাধ্যমেই দেওয়া হচ্ছে বাগানে জল। এবং বাকি জল পরিশোধন করে ব্যবহার করা যাবে রান্নার কাজেও। এই অভিনব ভাবনার উঠে এসেছে তাঁদের মডেল থেকে ।

একইভাবে নিত্যদিনে বাড়িতে যে সব বর্জ্য পদার্থ জমা হয়। যেমন ধরুন সবজি ও ফলের খোসা সেগুলি আমরা মাটি খুঁড়ে কিংবা মাটির ওপর ছড়িয়ে দিলে জৈব সার হিসেবে কাজে লাগাতে পাড়ব। সেই সম্পর্কেও বোঝালেন ভূগোল বিভাগের এক ছাত্র।

কে.এন.কলেজের ভূগোল বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র সুরজিত সাহা এবং তার সহপাঠীরা তৈরি করেছে নিত্যদিনের বর্জ্য পদার্থকে কীভাবে জৈব সার হিসেবে ব্যবহার করা যায়। যেমন সবজির খোসা, শুকিয়ে যাওয়া ফুল। এই সব কীভাবে মাটিতে থলিতে পুরে রাখলে জৈব সার হিসেবে ব্যবহার করা যায়। এছারাও নষ্ট কাঁচ, প্লাস্টিকের জিনিস থলিতে জমিয়ে রেখে কীভাবে আবার পুনরায় সেটিকে রিসাইকেল করে ব্যবহার করা যাবে।

শুক্রবার কে.এন.কলেজ আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে মোট ২৫টি স্টলে পড়ুয়ারা তাঁদের নিজের হাতে বানানো মডেল নিয়ে প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছিল। যার মধ্যে কলেজের বিভিন্ন বিভাগ থেকে ৫ টি স্টল ও জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ২০ টি স্কুলের পড়ুয়ারা এই প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করেছিল। শুক্রবার রাজ্য পলিউশান বোর্ড এবং কৃষ্ণনাথ কলেজের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত হয় এই বিজ্ঞান প্রদর্শনীর।

সেখানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য পলিউশান বোর্ডের চেয়ারম্যান ডঃ কল্যাণ রুদ্র। তিনি জানান, “এই কলেজ বহু ইতিহাস বহন করে চলেছে। এবং সেই কলেজেই পরিবেশ নিয়ে এই কর্মসূচি অবশ্যয় পরিবেশ আন্দোলনের অন্যতম পথ প্রদর্শক হতে পারবে। “আমাদের আরও ইলেকট্রিক গাড়ির ব্যবহার বাড়াতে হবে। এবং পাশাপাশি আমরা বহুল পরিমাণে বর্জ্য পদার্থ তৈরি করি। সেটা নিজেদের সচেতন হয়ে কমাতে হবে”।