‘প্যাসেঞ্জার থেঁতলে গেছে, চারিদিকে লাশ পরে আছে!’ ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা সালারের রাজেশ সেখের

মধ্যবঙ্গ নিউজ ডেস্কঃ “সে ভয়ঙ্কর ব্যাপার, কারও হাত নেই, কারও পা কেটে চলে গেছে। আচমকা ঝাঁকুনিতে আমাদেরও শরীরে চোট লেগেছে।” বলেন করমন্ডল এক্সপ্রেস করে চেন্নাইগামী যাত্রী রাজেশ সেখ।
ঘড়ির কাঁটায় সন্ধ্যে সাতটা তখন একটা বিকট আওয়াজ করে পাল্টি মারল ট্রেন বগি। এক কামরা এসে ঢুকে গেল অন্য কামরায়। কয়েক সেকেন্ডের নিরবতা। তারপরেই হাহাকার। ট্রেনের করে চেন্নাইের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন মুর্শিদাবাদের সালারের যুবক। এই ঘটনায় হতভম্ভ সেও। নিজে কোনও রকমে প্রাণে বেঁচে বাড়ি ফিরে এসেছেন।
“প্যাসেঞ্জার থেঁতলে গেছে। মাথা ধর আলাদা হয়ে গেছে, আমি গামছা দিয়ে বেঁধে এলাম। আমাদের বগির ভিতর অন্য একটা বগি ঢুকে গেছে। ইলেকট্রিকের তার থেকে আগুন লেগে অনেকে পুড়ে ছারখার হয়ে গেছে। চারিদিকে লাশ পরে আছে। একজন আহতকে সাথে করে নিয়ে এসেছি, কাটোয়াতে জি.আর.পি-এর হাতে তুলে দিয়েছি।” বললেন ট্রেন দুর্ঘটনায় প্রাণ ফিরে পাওয়া যাত্রী।
শুক্রবার সন্ধ্যা সাতটায় উড়িষ্যার বালেশ্বরে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেস। দুপুর তিনটে পনেরো মিনিট নাগাদ শালিমার স্টেশন থেকে ছেড়েছিল আপ করমণ্ডল এক্সপ্রেস। প্রায় চারঘণ্টা পরে বালেশ্বরের বাহানগা বাজারের কাছে করমণ্ডল এক্সপ্রেস ও বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। রেল দুর্ঘটনায় নিহত এবং আহতদের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। সূত্রের খবর, শনিবার ভোর পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ২৩৩ জন। আহত ৯০০ জনেরও বেশি। শনিবার সকালে রেলের তরফে জানানো হয়েছে, ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা ২৩৮। আহত হয়েছেন প্রায় ৬৫০ জন। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এই করমণ্ডল এক্সপ্রেসেই ছিলেন মুর্শিদাবাদের সালারের পাঁচ বাসিন্দা। জানা গিয়েছে, সালারের তালিবপুর সুন্দরপাড়ার শাহআলম সেখ, মাসুদ সেখ, সেন্টু সেখ, রাজেশ সেখ এবং তালিবপুর বাগানপাড়ার বাসিন্দা রেজাউল দফাদার করমণ্ডল এক্সপ্রেসে চেন্নাইয়ে কাজে যাচ্ছিলেন পরিযায়ী শ্রমিকের। মাঝপথে বালেশ্বরে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। সেই দুর্ঘটনায় তালিবপুরের পাঁচজনের মধ্যে চারজন ভয়াবহ অভিজ্ঞতা নিয়ে বাড়ি ফিরলেন।