বাইরনের ডিগবাজিতে বিপাকে বাম কংগ্রেস ? মমতাকে নিশানা অধীরের

মধ্যবঙ্গ নিউজঃ তিন মাসেই ভোল বদল। যিনি বলেছিলেন, দলে থাকবেন। কেনা যাবে না। তিনি বলছেন, দলে থেকে থেকে কাজ করতে পারছিলেন না। অবশেষে বদলে ফেললেন দল। ভোটে জেতার তিন মাসের মাথায় তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন কংগ্রেস বিধায়ক বাইরন বিশ্বাস। উপনির্বাচনের আগে প্রার্থী ঘোষণায় বড় চমক দিয়েছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি, বহরমপুরের সাংসদ অধীর রঞ্জন চৌধুরী। ভোটের হাওয়ায় বাইরনকে ‘আইরন’ বলেও সার্টিফিকেট দিয়েছিলেন অধীর। কিন্তু আক্ষরিক অর্থেই যা হল তা আসলে ‘আইরনি’ ।
দল বদলের পর বাইরনের দুর্বলতার ব্যাখ্যা দিয়েছেন অধীর নিজেই। মঙ্গলবার বহরমপুরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অধীর বলেন, বাইরন ব্যবসায়ী পরিবারের ছেলে । এই বিষয়কে ব্যবহার করে ভোটের আগেও তার উপর চাপ দেওয়া হয়েছিল। তখন তৃণমূল সফল হয় নি। ভোটের পর এখন সফল হয়েছে তৃণমূল। বাইরন বিয়োগে কার্যত বিচলিত কংগ্রেস শিবির।
এদিন বাইরদের দলবলদ নিয়ে ট্যুইট করেছেন জয়রাম রমেশ। বহরমপুরে সেই সূত্র ধরেই অধীর চৌধুরী বলেন, ” দিদি আমাদের পশ্চিমবঙ্গে ৭৭টা বিজেপির এমএলএ নিয়ে ঘর করতে পারে কিন্তু একটা কংগ্রেসের এমএলএ নিয়ে ঘর করতে পারে না , দুর্ভাগ্য। একটা কংগ্রেসের এমএলএ থাকা মানে দিদির সাম্রাজ্যের পতন হতোনা। মমতা ব্যানার্জি মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে থাকতেন, কিন্তু তাঁর এটাও সহ্য হল না। কারন কংগ্রেসের কিছু তাঁর সহ্য করবে না। তাই বিজেপির ৭৭টা এমএলএ নিয়ে দিদি ঘর সংসার করবে কিন্তু কংগ্রেসের একটা এমএলএ তাঁর সংসারে ঢুকে পড়ে তাহলে তাঁর অস্বস্তি”।
অধীরের হুঁশিয়ারি, ” দিদি ইতিহাস পড়লেও হয়তো মর্মাথ বুঝতে পারেননি, ঠকবাজ অত্যাচারি , একদিন, দুদিন , পাঁচ দিন থাকবে চিরজীবন থাকবে না” ।

তবে অধীরের ব্যাখ্যার প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে আগেই প্রশ্ন তুলেছিলেন সাগরদিঘির তৃণমূল কর্মীরা। সোমবারই সাগরদিঘির তৃণমূল নেতা সাইদুল রহমান বলেন, স্থানীয় কাউকে প্রার্থী করলে হয়তো এই পরিণতি হতো না। মঙ্গলবার সাগরদিঘিতে বৈঠক করে করেন কংগ্রেস কর্মীরা। সেখান থেকে সাইদুল রহমান জানান, ১০ জুন সাগরদিঘিতে সভা করবেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। সাইদুলের আক্ষেপ , “ যিনি যাওয়ার তিনি চলে গিয়েছেন” ।
তবে বাইরনের পদত্যাগের দাবিতে সাগরদিঘিতে পথে নেমেছেন জোটসঙ্গী বামেরা। মঙ্গলবার সাগরদিঘিতে মিছিল করে সিপিআই(এম)। বাইরনের হয়ে ভোট চাইতে সাগরদিঘি পার্টি অফিস থেকে আগে মিছিল করেছে সিপিআই(এম)। তবে এবার মিছিলে শোনা গিয়েছে শুধুই পদত্যাগের দাবি।
সাগরদিঘির বিধায়ককে কার্যত স্বাগত জানিয়েছে তৃণমুল। সাগরদিঘি ব্লক তৃণমূল সভাপতি সামসুল হুদার কথায়, এতে ভালো হবে সাগরদিঘির মানুষের। হবে এলাকার উন্নয়ন।
তবে বাইরনের দল বদল নিয়ে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে চাপ বেড়েছে বাম, কংগ্রেস শিবিরে। নির্বাচনে সমঝোতা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। তবে এদিনই রানিনগরের শেখপাড়ায় যৌথ মিছিল করে সিপিআই(এম) ও কংগ্রেস।